Kidney problems1

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়?

কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ এবং অতিরিক্ত পানি সরিয়ে দেয়। কিডনি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে, ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় রাখতে এবং হরমোন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুস্থ কিডনি আমাদের জীবনের জন্য অপরিহার্য। কিডনি সমস্যা হলে শরীরের বিভিন্ন অংশে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে, জীবনযাত্রার চাপ এবং ডায়েটের কারণে কিডনির সমস্যা অনেকেই ভোগেন। অনেক সময় আমরা প্রথম দিকে কিডনির অসুবিধা উপেক্ষা করি, যা পরে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিডনির রোগের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হলো কিডনি স্টোন, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন, ক্রনিক কিডনি ডিজিজ। কিডনির সমস্যা প্রাথমিকভাবে ল্যাটারাল ব্যথা, পেটে অসুবিধা বা ইউরিনেশন সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। কিডনি সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, কম লবণ গ্রহণ এবং নিয়মিত মেডিক্যাল চেকআপ জরুরি। বাংলাদেশে প্রচলিত কিছু খাবারে অতিরিক্ত লবণ বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। হাই ব্লাড প্রেশার এবং ডায়াবেটিস কিডনির ক্ষতির মূল কারণ। কিডনির রোগের লক্ষণ আগে চিনতে পারলে চিকিৎসা সহজ হয়। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কিডনি সুস্থ রাখতে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেও অনেক কিছু করা যায়। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ফলমূল, শাকসবজি এবং পানি গ্রহণ কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে। অতিরিক্ত চা বা কফি গ্রহণ কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। শিশুদের কিডনির স্বাস্থ্যও গুরুত্বপূর্ণ এবং ছোটবেলা থেকেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস শেখানো জরুরি। নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় কিডনির যত্ন বেশি প্রয়োজন। কিডনির সুস্থতা হারানো মানে শরীরের বর্জ্য পদার্থ জমে স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ায়। এটি সময়মতো চিহ্নিত করা না হলে রোগ জটিলতা তৈরি করতে পারে। কিডনি সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ সঠিকভাবে বুঝতে পারলে চিকিৎসা অনেক সহজ হয়। তাই সচেতনতা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অপরিহার্য।

কিডনির অবস্থান কোথায়?

Kidney problems2

কিডনি মানুষের পিঠের দুই পাশে অবস্থিত। এটি সাধারণত স্পাইনাল কলামের বাম ও ডান পাশে, মেরুদণ্ডের নিচের অংশে অবস্থান করে। বাম কিডনি সাধারণত ডান কিডনির তুলনায় একটু উপরে থাকে। কিডনির আকার প্রায় একটি মুঠোর সমান, দৈর্ঘ্যে প্রায় ১০-১২ সেন্টিমিটার। এটি পেছনের পেটের দেয়ালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। কিডনির চারপাশে ফ্যাটি টিস্যু থাকে যা এটিকে সুরক্ষা দেয়। কিডনি রঙে লালচে বাদামি হয়। কিডনি রেনাল আর্ক নামে পরিচিত ধমনী ও শিরার মাধ্যমে রক্ত পায়। প্রতিটি কিডনির ভেতরে নেফ্রন নামক অঙ্গ থাকে যা রক্ত ফিল্টার করে ইউরিন তৈরি করে। কিডনি আমাদের শরীরের পানির ব্যালান্স নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ। এটি অ্যাসিড-ব্যাস লেভেল এবং ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় রাখে। কিডনি হরমোন উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ, যেমন রেনিন, যা ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ভেতরের অংশে কিডনির পেরিনিফ্রিকাল ফ্যাট এবং রেনাল কপার্টিক্স থাকে। কিডনি মূত্রথলির সাথে ইউরেটার দ্বারা যুক্ত থাকে। কিডনির অবস্থান ঠিকভাবে জানা কিডনি ব্যথা চিহ্নিত করতে সহায়ক। কিডনির পেছনের অংশে চাপ বা আঘাতও ব্যথার কারণ হতে পারে। বাংলাদেশে অনেকেই কিডনি ব্যথাকে সাধারণ পিঠ ব্যথা মনে করেন। তাই সঠিক ল্যান্ডমার্ক জানা গুরুত্বপূর্ণ। কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করতে নিয়মিত পানি পান করা, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য নেওয়া জরুরি।

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়?

Kidney problems3

কিডনির সমস্যা শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথার মাধ্যমে প্রকাশ পেতে পারে। মূলত পিঠ, কোমর, পাশে, পেটে বা ইউরিনেশন সংক্রান্ত অঞ্চলে ব্যথা অনুভূত হয়। কখনও কখনও ব্যথা বুকের নিচ বা লেগ পর্যন্ত ছড়াতে পারে।বিস্তারিত আলোচনা করা হলো –

১.পিঠের নীচে ব্যথা

পিঠের নীচে ব্যথা কিডনির সমস্যার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। অনেক সময় মানুষ এটিকে সাধারণ মাংসপেশির ব্যথা মনে করেন। কিন্তু কিডনির সমস্যা থাকলে ব্যথা সাধারণ পিঠ ব্যথার তুলনায় অনেক তীব্র এবং স্থায়ী হয়। বাংলাদেশে গরম পরিবেশ, কম পানি পান, এবং অতিরিক্ত চা-কফি গ্রহণের কারণে এই ব্যথা আরও বাড়তে পারে। কিডনি স্টোন বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন থাকলে ব্যথা হঠাৎ শুরু হতে পারে এবং ঢেউয়ের মতো বৃদ্ধি পেতে পারে। ব্যথা সাধারণত একপাশে বেশি অনুভূত হয়। অনেক সময় এটি কোমর থেকে পিঠের নীচ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। হালকা চাপ বা বসা অবস্থায় ব্যথা বাড়তে পারে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ব্যথা সঙ্গে বমি, জ্বালা বা প্রস্রাবের অসুবিধা দেখা দিতে পারে। পেশী শক্ত হয়ে যাওয়া, টান ধরা, বা স্থিরভাবে চলতে কষ্ট পাওয়াও সাধারণ লক্ষণ। দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা কিডনির ক্ষতির প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে কম্পিউটার বা অফিসের কাজের কারণে দীর্ঘ সময় বসে থাকা এই ব্যথা বাড়াতে পারে। অনেক সময় মানুষ এটিকে হালকা মলদ্বারের ব্যথা বা মাংশপেশির টান মনে করে। পিঠের নীচে ব্যথা কখনও হালকা, কখনও তীব্র হতে পারে। এটি দিন ও রাতের সময় ভিন্ন মাত্রায় অনুভূত হয়। ব্যথার সঙ্গে শরীরে ক্লান্তি, অজ্ঞানতা বা ঠাণ্ডা লাগার মতো অনুভূতিও হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি হালকা জ্বালা বা চাপের মতো থাকে, কিন্তু উপেক্ষা করলে সমস্যার মাত্রা বাড়ে। কিডনি স্টোন থাকলে ব্যথা ঢেউয়ের মতো আসা-যাওয়া করে এবং হঠাৎ তীব্র হয়ে যায়। বয়স্ক এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যথা ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে কখনও কখনও শুধুমাত্র পেট ব্যথা বা চুলকানি দেখা দিতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক ব্যথা এবং কিডনি ব্যথার মিল থাকতে পারে, তাই পার্থক্য বোঝা জরুরি। প্রাকৃতিক পানির অভাব বা ডিহাইড্রেশনও এই ব্যথা বাড়াতে পারে। হঠাৎ ব্যথা শুরু হলে সময়মতো চিকিৎসা না নিলে সমস্যা ক্রনিক কিডনি ডিজিজে রূপ নিতে পারে। ব্যথা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পানি পান, বিশ্রাম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ। ব্যথা অনুভূত হলে হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা কিছুটা সহায়ক হতে পারে। তবে খুব তীব্র বা স্থায়ী ব্যথার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অপরিহার্য। বাংলাদেশে অনেকেই সাধারণভাবে পিঠের ব্যথা উপেক্ষা করেন, যা পরে কিডনির বড় সমস্যায় রূপ নিতে পারে।

২.কোমরের পাশে ব্যথা

কোমরের পাশে ব্যথা কিডনির সমস্যার আরেকটি সাধারণ লক্ষণ। সাধারণত এটি পিঠের নীচের অংশ থেকে শুরু হয়ে কোমরের পাশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় বসা, ভারী কাজ বা কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে অনেকেই এই ব্যথা অনুভব করেন, কিন্তু কিডনির সমস্যা থাকলে ব্যথা সাধারণ পেশী ব্যথার তুলনায় আলাদা এবং তীব্র হয়। কিডনি স্টোন বা সংক্রমণ থাকলে ব্যথা হঠাৎ শুরু হয় এবং ঢেউয়ের মতো আসা-যাওয়া করে। ব্যথা প্রায়ই একপাশে বেশি অনুভূত হয়, যদিও দুপাশে মিলেও দেখা দিতে পারে। ব্যথার সঙ্গে জ্বালা, চাপ বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। কখনও কখনও এটি পেটে, লেজুর দিকে বা ইউরিনেশন সংক্রান্ত অঞ্চলেও ছড়াতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থাকলে ব্যথা ক্রমশ বৃদ্ধি পায় এবং স্থিরতা কমে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ব্যথা সঙ্গে বমি বা মাথা ঘোরা দেখা দিতে পারে। শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যথা ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে; শিশুদের মাঝে এটি পেটের ব্যথা বা অসন্তুষ্টি হিসেবে দেখা যায়। নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় কিডনির চাপ বা সংক্রমণ এই ব্যথাকে তীব্র করতে পারে। ব্যথা চলতে চলতে লেগ বা পায়ের উপরের অংশে অনুভূত হতে পারে। হালকা চাপ, বসা বা ওঠা-নামার সময় ব্যথা বৃদ্ধি পায়। ব্যথা কখনও স্থির থাকে, আবার কখনও ঢেউয়ের মতো ওঠা-নামা করে। বাংলাদেশে গরম আবহাওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি না পান করাও এই ব্যথাকে তীব্র করতে পারে। কিডনি স্টোন থাকলে ব্যথা হঠাৎ তীব্র হয়ে প্রায় সহ্য করার অসুবিধা সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থাকলে ব্যথা শরীরের অন্যান্য অংশেও অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিকভাবে হালকা চাপের মতো অনুভূত হলেও, অবহেলা করলে এটি ক্রনিক কিডনি রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। ব্যথা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, এবং নিয়মিত বিশ্রাম জরুরি। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেও কিছুটা আরাম পাওয়া যায়, যেমন হালকা হাঁটা বা গরম পানির থেরাপি। তীব্র ব্যথা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের সমস্যা, রঙ পরিবর্তন বা জ্বালা থাকলে তা কিডনির সমস্যার প্রাথমিক ইঙ্গিত। বাংলাদেশে অনেকেই এই ব্যথা উপেক্ষা করেন, যা পরে গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

আরোও পড়ুনঃ  কোন সবজি খেলে ত্বক ফর্সা হয়?

৩.পেটে ব্যথা

পেটে ব্যথা কিডনির সমস্যার আরেকটি লক্ষণ। এটি বিশেষ করে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা কিডনি স্টোনের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে দেখা যায়। ব্যথা পেটের নীচের অংশে বা মধ্যভাগে অনুভূত হয় এবং কখনও কখনও কোমর বা পাশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে অনেকেই পেটের ব্যথাকে সাধারণ গ্যাস বা হজমের সমস্যার সঙ্গে মিশিয়ে ফেলেন। কিডনির সমস্যা থাকলে ব্যথা সাধারণ পেট ব্যথার তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী এবং তীব্র হয়। কখনও ব্যথা হঠাৎ শুরু হয়, আবার কখনও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। পেটে ব্যথার সঙ্গে বমি, জ্বালা বা মলদ্বারের অস্বস্তিও দেখা দিতে পারে। শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়; শিশুদের মাঝে কখনও শুধু বমি বা কাঁপুনি দেখা যায়। নারীদের ক্ষেত্রে পেটের ব্যথা মাসিক বা গর্ভাবস্থার কারণে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। কিডনি স্টোন থাকলে ব্যথা ঢেউয়ের মতো আসে এবং হঠাৎ তীব্র হয়। প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালা সাধারণ লক্ষণ। বাংলাদেশের জীবনযাত্রায় কম পানি পান করা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস না থাকা এই ব্যথাকে তীব্র করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থাকলে পেটের অন্যান্য অংশেও অস্বস্তি ছড়ায়। ব্যথা কখনও স্থির থাকে, আবার কখনও ওঠা-নামার মতো ধাক্কা দেয়। প্রাথমিকভাবে হালকা চাপ বা অস্বস্তি মনে হলেও, অবহেলা করলে এটি ক্রনিক কিডনি রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। পেটের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, এবং বিশ্রাম অপরিহার্য। হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা কিছুটা আরাম দিতে পারে। তীব্র বা স্থায়ী ব্যথার ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন, রক্তমিশ্রণ বা ঘনত্ব বৃদ্ধি দেখা দিলে তা গুরুতর ইঙ্গিত। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক লক্ষণ সময়মতো শনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে অনেকেই এই ব্যথা উপেক্ষা করে, যা পরে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিডনির স্বাস্থ্য সচেতনতার মাধ্যমে রক্ষা করা সম্ভব।

৪.ইউরিনের সময় ব্যথা

ইউরিনের সময় ব্যথা কিডনির সমস্যার অন্যতম লক্ষণ। সাধারণত এটি ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা কিডনি স্টোনের কারণে দেখা যায়। প্রস্রাবের সময় জ্বালা, চুলকানি বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। অনেক সময় রোগী এটি সামান্য অস্বস্তি মনে করে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি কিডনির প্রাথমিক সমস্যা নির্দেশ করে। ব্যথা কখনও হালকা, আবার কখনও তীব্র হয়ে হঠাৎ অনুভূত হয়। বাংলাদেশে অনেকেই এটি উপেক্ষা করেন, যা পরে সমস্যা বাড়ায়। ব্যথার সঙ্গে বারবার প্রস্রাবের প্রয়োজন অনুভূত হতে পারে। কখনও প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তিত হয় বা রক্তমিশ্রিত হতে পারে। এটি বিশেষত নারী এবং শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। ইউরিনারি সংক্রমণের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের সময় ব্যথা দীর্ঘ সময় স্থায়ী থাকে। কিডনি স্টোন থাকলে ব্যথা ঢেউয়ের মতো আসা-যাওয়া করে। ব্যথা কখনও কোমর বা পেট পর্যন্ত ছড়াতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা অস্বস্তি মনে হলেও, সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের অতিরিক্ত ব্যবহার করলে ব্যথা বাড়তে পারে। ব্যথার সঙ্গে জ্বালা, জ্বর বা বমি দেখা দিলে তা বিশেষ সতর্কতার ইঙ্গিত। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ ব্যবহার করলে ব্যথা কমানো সম্ভব। হালকা ব্যায়াম বা গরম পানির ব্যবহার কিছুটা আরাম দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থাকলে পুরো ইউরিনারি ট্র্যাকের ক্ষতি হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি পেট ব্যথা বা ঘুমের সমস্যার সঙ্গে প্রকাশ পেতে পারে। নারীদের মধ্যে মাসিকের সঙ্গে মিলিত হওয়ায় ব্যথা বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। ব্যথা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি, এবং বিশ্রাম অপরিহার্য। বাংলাদেশে বিশেষ করে শীতে ইউরিনারি সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। প্রাথমিকভাবে স্বল্প ব্যথা হলেও অবহেলা করলে ক্রনিক কিডনি রোগে রূপ নিতে পারে। প্রস্রাবের সময় ব্যথা ও অস্বস্তি নিয়মিত থাকলে চিকিৎসা জরুরি। এটি সময়মতো শনাক্ত হলে কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করা সহজ হয়।

৫.ইউরিন কালারের পরিবর্তন

কিডনির সমস্যার অন্যতম লক্ষণ হলো ইউরিন বা প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তন। সাধারণত সুস্থ কিডনি থেকে হালকা হলুদ রঙের ইউরিন আসে, যা শরীরের পানির পরিমাণ এবং খাদ্যাভ্যাসের উপর নির্ভর করে। কিডনি স্টোন, সংক্রমণ বা ইনফ্লেমেশন থাকলে ইউরিনের রঙ পরিবর্তিত হতে পারে। এটি গাঢ় হলুদ, লালচে বা কখনও কফি রঙের মতো হতে পারে। বাংলাদেশে অনেক সময় ডিহাইড্রেশনের কারণে ইউরিন গাঢ় হয়, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি রঙ পরিবর্তন কিডনির অসুবিধার ইঙ্গিত। কখনও প্রস্রাবে রক্তের চিহ্ন দেখা যায়, যা কিডনি স্টোন বা সংক্রমণের লক্ষণ। রঙের সঙ্গে ঘ্রাণও পরিবর্তিত হতে পারে। অনিয়মিত প্রস্রাব বা ঘন ইউরিনও কিডনির সমস্যার অংশ হতে পারে। ইউরিন কালারের পরিবর্তন প্রাথমিকভাবে হালকা হলেও উপেক্ষা করলে সমস্যা বাড়তে পারে। শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে এটি ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। নারীদের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন গর্ভাবস্থা বা হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে। প্রস্রাবের রঙে রক্ত বা ঝিল্লি দেখা দিলে তা তাত্ক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পানি না পান করা, অতিরিক্ত লবণ বা প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করে। ইউরিন কালারের পরিবর্তনের সঙ্গে জ্বালা, ব্যথা বা অস্বস্তি দেখা দিলে তা কিডনি বা ইউরিনারি ট্র্যাক্টের সমস্যা নির্দেশ করে। বাংলাদেশে অনেকেই এটি হালকা সমস্যা মনে করেন, কিন্তু তা দীর্ঘমেয়াদি অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে। রঙ পরিবর্তন ও ঘনত্ব পর্যবেক্ষণ করলে কিডনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে পূর্বাভাস পাওয়া যায়। কিডনি সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্য, এবং নিয়মিত বিশ্রাম অপরিহার্য। ইউরিন কালারের পরিবর্তন প্রাথমিকভাবে সহজভাবে শনাক্তযোগ্য। হঠাৎ পরিবর্তন বা রক্তমিশ্রিত ইউরিন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা এড়াতে সচেতন হওয়া সবচেয়ে কার্যকর।

আরোও পড়ুনঃ  মেয়েদের মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ?

৬.কোমরের উপরের অংশে চাপ অনুভূতি

কোমরের উপরের অংশে চাপ অনুভূতি কিডনির সমস্যার আরেকটি লক্ষণ। এটি সাধারণত কিডনি সংক্রমণ, প্রদাহ বা স্টোনের কারণে দেখা যায়। রোগী প্রাথমিকভাবে হালকা চাপ বা অস্বস্তি মনে করতে পারে। তবে সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় রূপ নেয়। চাপ সাধারণত কোমরের উপরের অংশে, পিঠের মধ্যভাগের কাছে অনুভূত হয়। কখনও এটি পেট বা পাশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় বসা, ভারী কাজ এবং কম পানি পান এই চাপকে আরও বাড়াতে পারে। কিডনি সংক্রমণের ক্ষেত্রে চাপের সঙ্গে জ্বর, শীতলতা বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। চাপ অনুভূতি দিন ও রাতের সময় ভিন্ন মাত্রায় হতে পারে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে এটি ঢেউয়ের মতো আসে এবং চলে যায়। কিডনি স্টোন থাকলে চাপ হঠাৎ তীব্র হয়ে যায় এবং সহ্য করা কঠিন হয়ে ওঠে। প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা চাপ উপেক্ষা করলে ক্রনিক কিডনি ডিজিজে রূপ নিতে পারে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থা বা হরমোনাল পরিবর্তনেও চাপ অনুভূত হতে পারে। চাপের সঙ্গে পেশী টান, অস্বস্তি বা ব্যথা মিলিত হতে পারে। বাংলাদেশের অনেক মানুষ এটিকে সাধারণ মাংসপেশির সমস্যা মনে করেন। কিন্তু কিডনি সমস্যার চাপ প্রায়ই একপাশে বেশি তীব্র হয়। পর্যাপ্ত পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস চাপ কমাতে সহায়ক। হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা কিছুটা আরাম দিতে পারে। তীব্র চাপ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৭.বুকের নিচে ব্যথা

বুকের নিচে ব্যথা কিডনির বড় সমস্যা বা দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ক্ষেত্রে দেখা যায়। সাধারণত ডান বা বাম কিডনির সমস্যা থাকলে, সেই পাশে বুকের নিচের অংশে চাপ বা ব্যথা অনুভূত হয়। বাংলাদেশে অনেকেই এটি হার্ট বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা মনে করে। কিডনি সংক্রমণ, স্টোন বা প্রদাহের কারণে ব্যথা হঠাৎ শুরু হতে পারে এবং ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। কখনও ব্যথা ঢেউয়ের মতো আসে এবং চলে যায়। ব্যথার সঙ্গে জ্বর, শীতলতা, বমি বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা থাকলে ব্যথা স্থায়ী এবং ক্রমবর্ধমান হয়। শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থা বা মাসিকের কারণে ব্যথার সঙ্গে মিল থাকতে পারে। ব্যথা সাধারণত কোমর বা পাশে ছড়াতে পারে। কখনও এটি পেটের নীচে বা লেজুর দিকে অনুভূত হয়। প্রাথমিকভাবে হালকা চাপ বা অস্বস্তি মনে হলেও, অবহেলা করলে এটি ক্রনিক কিডনি রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশে কম পানি পান, প্রক্রিয়াজাত খাবার বা অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ এই ব্যথাকে আরও তীব্র করে। কিডনি স্টোন থাকলে ব্যথা তীব্র ও হঠাৎ আকার ধারণ করে। ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন, ঘনত্ব বৃদ্ধি বা রক্তমিশ্রণ দেখা দিলে তা বিশেষ সতর্কতার ইঙ্গিত। হালকা ব্যায়াম বা গরম পানির থেরাপি কিছুটা আরাম দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থাকলে পুরো ইউরিনারি ট্র্যাক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শিশুদের মধ্যে কখনও এটি কেবল অস্বস্তি বা বমি হিসেবে প্রকাশ পায়। নারীদের মধ্যে মাসিক ব্যথা ও কিডনি ব্যথার পার্থক্য বোঝা জরুরি। ব্যথা নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পানি, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, এবং বিশ্রাম অপরিহার্য। তীব্র বা স্থায়ী ব্যথার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে বিশেষ করে শীতে ইউরিনারি সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। প্রাথমিক লক্ষণ চিহ্নিত করলে কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করা সহজ। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

৮.লেগ বা হাঁটুর দিকে ব্যথা

কিডনির দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা বা কিডনি স্টোনের কারণে ব্যথা লেগ বা হাঁটুর দিকে ছড়াতে পারে। এটি প্রধানত নার্ভ বা রেফার্ড পেইন (referred pain) এর মাধ্যমে ঘটে। বাংলাদেশে অনেকেই এটি সাধারণ পেশী বা হাঁটুর ব্যথা মনে করে, যা অনেক সময় চিকিৎসা নিতে বিলম্ব ঘটায়। কিডনির সমস্যা থাকলে ব্যথা কখনও হালকা, আবার কখনও ঢেউয়ের মতো তীব্র হয়ে আসে। রোগীর হাটুর মোচড় বা পেশীর আন্দোলন ব্যথাকে আরও বাড়াতে পারে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থাকলে ব্যথা স্থায়ী হয় এবং হাঁটাচলায় অসুবিধা তৈরি করে। শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে; কখনও কেবল হাঁটুর দুর্বলতা বা অস্বস্তি দেখা যায়। নারীদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় কিডনির চাপ এই ব্যথাকে তীব্র করতে পারে। ব্যথার সঙ্গে পায়ের পেশীতে টান, অস্বস্তি বা ঝাপসা অনুভূত হতে পারে। প্রাথমিকভাবে হালকা ব্যথা মনে হলেও, অবহেলা করলে ক্রনিক কিডনি রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় বসা বা ভারী কাজ এই ব্যথাকে আরও বাড়ায়। কিডনি স্টোন থাকলে ব্যথা হঠাৎ তীব্র হয়ে ঢেউয়ের মতো আসে। ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের সময় জ্বালা, রঙ পরিবর্তন বা ঘনত্ব বৃদ্ধি দেখা দিতে পারে। হালকা হাঁটা বা ব্যায়াম কিছুটা আরাম দিতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং বিশ্রাম ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি প্রাথমিকভাবে সহজে উপেক্ষা করা হয়।

৯.ঘাড় বা কাঁধে ব্যথা

ঘাড় বা কাঁধে ব্যথা কিডনির সরাসরি লক্ষণ নয়, তবে দীর্ঘমেয়াদি কিডনি সমস্যা বা পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতার কারণে এটি দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশে অনেকেই এটি সাধারণ মাংসপেশির ব্যথা মনে করেন। কিডনি সংক্রমণ বা প্রদাহ থাকলে শরীরের বিভিন্ন অংশে অস্বস্তি ছড়াতে পারে। ব্যথা প্রাথমিকভাবে হালকা চাপ বা অস্বস্তি হিসেবে অনুভূত হয়। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা থাকলে ঘাড় বা কাঁধে ব্যথা স্থায়ী এবং ক্রমবর্ধমান হয়। এটি বিশেষ করে দীর্ঘ সময় বসা বা ভারী কাজের কারণে বাড়তে পারে। শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে ব্যথার প্রকৃতি ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক বা হরমোনাল পরিবর্তনের সঙ্গে মিলিত হওয়ায় ব্যথার মাত্রা পরিবর্তিত হতে পারে। কিডনি সমস্যা থাকলে ব্যথার সঙ্গে ক্লান্তি, দুর্বলতা, জ্বর বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। হঠাৎ ব্যথা শুরু হলে অবহেলা করলে সমস্যা ক্রনিক কিডনি রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। ব্যথা ঢেউয়ের মতো আসা-যাওয়া করতে পারে, কখনও স্থির থাকে, আবার কখনও চলাচলের সময় তীব্র হয়। প্রাথমিকভাবে হালকা ব্যথা মনে হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এটি দেহের অন্যান্য অংশের উপর চাপ তৈরি করে। পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, এবং বিশ্রাম ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। হালকা স্ট্রেচিং বা হালকা ব্যায়াম কিছুটা আরাম দিতে পারে। তীব্র বা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। শিশুদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ব্যথা কেবল অস্বস্তি বা ঘুমের সমস্যার সঙ্গে প্রকাশ পেতে পারে। বাংলাদেশে শীতে ইউরিনারি সংক্রমণের কারণে ব্যথা আরও বাড়তে পারে। কিডনি স্টোন থাকলে ব্যথা হঠাৎ তীব্র হয়ে ঢেউয়ের মতো অনুভূত হয়। ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন, ঘনত্ব বৃদ্ধি বা জ্বালা দেখা দিলে তা সতর্কতার ইঙ্গিত। ব্যথা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, পর্যাপ্ত পানি এবং নিয়মিত বিশ্রাম অপরিহার্য। প্রাথমিক লক্ষণ সময়মতো শনাক্ত করলে কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব। চিকিৎসা শুরু করলে জটিলতা এড়ানো যায়।

আরোও পড়ুনঃ  কিডনিতে পাথর হলে কি খাওয়া যাবে না?

১০.সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা জ্বালা বা অস্বস্তি

কিডনির সমস্যা অনেক সময় শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে থাকা জ্বালা বা অস্বস্তি হিসেবে প্রকাশ পায়। এটি কিডনি সংক্রমণ, স্টোন বা দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহের কারণে হতে পারে। বাংলাদেশে অনেকেই এটি সাধারণ ক্লান্তি বা পেশীর টান মনে করেন, যার কারণে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নেয়া হয় না। জ্বালা বা অস্বস্তি শরীরের কোমর, পিঠ, পেট, লেগ বা কাঁধে অনুভূত হতে পারে। কখনও এটি হালকা চাপের মতো থাকে, আবার কখনও ঢেউয়ের মতো তীব্র হয়ে আসে। কিডনি স্টোন থাকলে এই জ্বালা হঠাৎ তীব্র হয়ে রোগীকে স্থির থাকতে বাধ্য করে। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থাকলে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা অস্বস্তি স্থায়ী হয় এবং দৈনন্দিন কার্যকলাপ ব্যাহত করে। শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে; কখনও শুধুই অস্বস্তি বা ঘুমে সমস্যা হিসেবে দেখা যায়। নারীদের মধ্যে মাসিক বা গর্ভাবস্থার কারণে জ্বালা আরও বিভ্রান্তিকর হতে পারে। জ্বালা বা অস্বস্তির সঙ্গে প্রস্রাবের সমস্যা, রঙ পরিবর্তন বা জ্বালা দেখা দিলে তা কিডনির সংকেত। পর্যাপ্ত পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস জ্বালা কমাতে সহায়ক। হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা কিছুটা আরাম দেয়। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা থাকলে পুরো ইউরিনারি ট্র্যাক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। Bangladesh-এ শীতে ইউরিনারি সংক্রমণ ও ডিহাইড্রেশনের কারণে জ্বালা বাড়তে পারে। হঠাৎ বা তীব্র অস্বস্তি দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ব্যথা বা জ্বালা চলমান থাকলে এটি ক্রনিক কিডনি ডিজিজের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

কিডনি ব্যথা কোথায় হয়?

Kidney problems4

কিডনি ব্যথা সাধারণত পিঠের নীচে বা কোমরের পাশে অনুভূত হয়। এটি একপাশে বেশি তীব্র হতে পারে, তবে দুপাশেও ছড়াতে পারে। ব্যথা হঠাৎ বা ধীরে ধীরে শুরু হতে পারে এবং ঢেউয়ের মতো ওঠা-নামা করে। বাংলাদেশে অনেকেই এটি মাংসপেশির ব্যথা মনে করে, যার কারণে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নেয়া হয় না। কিডনি স্টোন, সংক্রমণ বা প্রদাহ থাকলে ব্যথা তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। ব্যথার সঙ্গে জ্বালা, অস্বস্তি, প্রস্রাবে সমস্যা বা রঙ পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যথা ভিন্নভাবে প্রকাশ পায়; কখনও কেবল অস্বস্তি বা ঘুমে সমস্যা হিসেবে দেখা যায়। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক বা গর্ভাবস্থার কারণে ব্যথা বিভ্রান্তিকর হতে পারে। ব্যথা কোমর, পেট, লেগ, কাঁধ বা বুকের নিচে ছড়াতে পারে। প্রাথমিকভাবে হালকা চাপ বা অস্বস্তি মনে হলেও, অবহেলা করলে এটি ক্রনিক কিডনি রোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, এবং বিশ্রাম ব্যথা কমাতে সহায়ক। হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা কিছুটা আরাম দেয়। দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ থাকলে পুরো ইউরিনারি ট্র্যাক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। Bangladesh-এ শীতে ইউরিনারি সংক্রমণ ও ডিহাইড্রেশনের কারণে ব্যথা বাড়তে পারে। কিডনি ব্যথা প্রাথমিকভাবে সহজভাবে শনাক্তযোগ্য। হঠাৎ বা তীব্র ব্যথা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ব্যথা চলমান থাকলে এটি ক্রনিক কিডনি ডিজিজের দিকে নিয়ে যেতে পারে। প্রাথমিক লক্ষণ সঠিকভাবে শনাক্ত করলে সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিডনির ব্যথা শরীরের অন্যান্য অংশেও অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি প্রাথমিকভাবে কেবল অস্বস্তি বা অজ্ঞানতার মতো প্রকাশ পেতে পারে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পর্যাপ্ত পানি পান কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে হালকা গরম পানি বা হালকা স্ট্রেচিং আরাম দিতে পারে। তীব্র ব্যথা হলে দেরি না করে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। বাংলাদেশের জীবনযাত্রার কারণে কিডনি সমস্যা এবং ব্যথা বৃদ্ধি পেতে পারে। সচেতনতা এবং প্রাথমিক চিকিৎসা কিডনির জটিলতা প্রতিরোধে কার্যকর।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়?এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তরগুলো-

কিডনি ব্যথা বুঝতে কি লক্ষণগুলো লক্ষ্য করা উচিত?

কিডনি ব্যথা সাধারণত পিঠের নীচে, কোমর বা পাশে অনুভূত হয়। ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবে সমস্যা, জ্বালা, রঙ পরিবর্তন বা ঘনত্ব বৃদ্ধি দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি। এছাড়াও পেট, লেগ, হাঁটু বা কাঁধে ছড়িয়ে থাকা অস্বস্তি বা চাপও কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা অস্বস্তি উপেক্ষা করলে সমস্যা ক্রনিক কিডনি ডিজিজে রূপ নিতে পারে।

কিডনির সমস্যা প্রতিরোধ করতে কি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?

পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম কিডনির সুস্থতা রক্ষা করে। ডিহাইড্রেশন, অতিরিক্ত লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানো জরুরি। প্রয়োজনমতো ডাক্তারকে দেখানো এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা কিডনির সমস্যা আগেভাগে শনাক্ত করতে সাহায্য করে।

উপসংহার

কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করা, রক্তে পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখা, এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিডনির সুস্থতা রক্ষা করা মানে পুরো দেহের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া। বাংলাদেশে কম পানি পান, স্বাস্থ্যবিধির অভাব, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে কিডনির সমস্যা বাড়ছে। কিডনি সংক্রমণ, স্টোন, প্রদাহ বা ক্রনিক কিডনি রোগ সময়মতো শনাক্ত না করলে গুরুতর জটিলতা তৈরি করতে পারে। পিঠের নীচে, কোমর, পেট, লেগ, হাঁটু, কাঁধ বা বুকের নিচে ব্যথা, প্রস্রাবে সমস্যা, রঙ পরিবর্তন, জ্বালা বা অস্বস্তি কিডনির সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে লক্ষণ ভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে, তাই সময়মতো পর্যবেক্ষণ জরুরি। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক, গর্ভাবস্থা বা হরমোনাল পরিবর্তনের সঙ্গে মিলিত হয়ে লক্ষণ বিভ্রান্তিকর হতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা চাপ বা অস্বস্তি উপেক্ষা করলে সমস্যা ক্রনিক কিডনি ডিজিজে রূপ নিতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম কিডনির সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। হালকা ব্যায়াম, হাঁটা এবং প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে হালকা গরম পানি ব্যবহার কিছুটা আরাম দিতে পারে। বাংলাদেশে শীতে ইউরিনারি সংক্রমণ বেশি দেখা যায়, তাই সতর্ক থাকা জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা নিলে কিডনির সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। ডিহাইড্রেশন, অতিরিক্ত লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার কমানো কিডনির চাপ কমায়। 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *